ভিজিট করুন বাংলাদেশ অগ্নিবীরের মূল ওয়েবসাইটে
চরণবুহ্য অনুসারে ‘উপবেদ' চার প্রকার। ধনুর্বেদ বা যুদ্ধবিদ্যা, গন্ধর্ববেদ বা সঙ্গীত বিদ্যা, অর্থশাস্ত্র বা শিল্প বিদ্যা, আয়ুর্বেদ বা চিকিৎসা বিদ্যা। অনেক বিদ্বান অর্থশাস্ত্রের স্থলে স্থাপত্যবেদকে উপবেদের একটি বলে বিবেচনা করেন।
ধনুর্বেদ
ধনুর্বেদ যুদ্ধবিদ্যার বিজ্ঞানকে বোঝায় এবং এটিকে যজুর্বেদের উপবেদ হিসাবে গণ্য করা হয়। পণ্ডিত ভগবৎদত্ত ধনুর্বেদের ইতিহাস লিখেছিলেন। পণ্ডিত জয়দেব শর্মা বিদ্যালঙ্কার রচিত ধনুর্বেদের ইতিহাস ১৬৭৪ বিক্রমাব্দে স্টার প্রেস, প্রয়াগ থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। পণ্ডিত রাজারাম 'ঔশনস ধনুর্বেদ সংকলন' সম্পাদনা করেছিলেন, যা ১৬৮০ বিক্রমাব্দে আর্ষগ্রন্থাবলী, লাহোর থেকে প্রকাশিত হয়। গুরুকুল বৃন্দাবনের এক স্নাতক পণ্ডিত মহেন্দ্রকুমার বেদশিরোমণি 'পৌরস্ত্য ধনুর্বেদ' শিরোনামে একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ লিখেছিলেন, যা ১৬৮৮ বিক্রমাব্দে উক্ত গুরুকুল থেকেই প্রকাশিত হয়। গুরুকুল ঝাঝর-এর স্নাতক ডক্টর দেবব্রত ধনুর্বেদ নিয়ে গবেষণা সম্পন্ন করে লালবাহাদুর শাস্ত্রী সংস্কৃত বিদ্যাপীঠ দিল্লি থেকে পিএইচ.ডি. ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
প্রাচীনকালে বিমান বিদ্যার উপরও অনেক গ্রন্থ রচিত হয়েছিল। স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী উনার লেখা ঋগ্বেদাদি-ভাষ্যভূমিকা-তে নৌ- বিমানাদি বিদ্যা-সংক্রান্ত একটি পৃথক অধ্যায় লিখে বেদে বৈমানিক বিদ্যার মূল গ্রন্থ প্রমাণ করেছেন। মহর্ষি ভরদ্বাজ রচিত ‘যন্ত্রসর্বস্ব’ নামক গ্রন্থের বৈমানিক অধ্যায়ের অনুবাদ, মূল গ্রন্থের উপর লিখিত বোধায়নবৃত্তিসহ প্রিয়রত্ন আর্য ‘বিমানশাস্ত্র’ নামে করেছিলেন, যা ১৬৪৩ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। আর্যজী (ব্রহ্মমুনি) ‘বৃহদ্ বিমানশাস্ত্র’ সম্পাদনা করেছিলেন, যা কিনা তিনি হস্তলিখিত পাণ্ডুলিপিরূপে প্রাপ্ত হয়েছিলেন। এটি সর্বদেশিক সভা ১৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশ করেছিল।
বশিষ্ঠ ধনুর্বেদ সংহিতা
টীকাকার : পণ্ডিত স্বামী হরদয়ালু
ভাষা: হিন্দি
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৭৬
সাইজ: ২০.৩৪ এমবি
বশিষ্ঠ ধনুর্বেদ সংহিতা (মূল)
লেখক : মহর্ষি বশিষ্ঠ
ভাষা: সংস্কৃত
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৩২
সাইজ: ১২১.৯৭ কেবি
বৃহদ্ বিমানশাস্ত্র
অনুবাদক : স্বামী ব্রহ্মমুনি পরিব্রাজক
ভাষা: হিন্দি
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৩৬৮
সাইজ: ১৩ এমবি
গন্ধর্ববেদ (আসছে.....)
অর্থবেদ (আসছে.....)
অর্থশাস্ত্র ও রাজনীতির সাথে সম্পর্কিত গ্রন্থগুলিকে অর্থবেদের অন্তর্গত হিসেবে ধরা করা যেতে পারে। প্রাচীনকালে রাজনীতি, শাসনব্যবস্থা এবং অর্থশাস্ত্রের সাথে সম্পর্কিত শত শত গ্রন্থ প্রাচীন ঋষিদের দ্বারা রচিত হয়েছিল, যা আজ অপ্রাপ্য। আচার্য বৃহস্পতি কর্তৃক রচিত রাজধর্মসূত্র ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দে ইউরোপের কোনো এক পত্রিকায় রোমান লিপিতে মুদ্রিত হয়েছিল। ১৬২০ খ্রিস্টাব্দে গুরুকুল কাংগড়ীর মাসিক পত্রিকা 'বৈদিক ম্যাগাজিন'-এ এগুলি প্রকাশিত হয়। এগুলিকে নাগরী লিপিতে প্রকাশ করার কৃতিত্ব পণ্ডিত ভগবৎদত্তকে দেওয়া হয়, যিনি এই বার্হস্পত্য সূত্রগুলির বিদ্বত্তাপূর্ণ ভূমিকাও লিখেছিলেন। ৬ অধ্যায়ে বিভক্ত এই রাজসূত্রগুলির মোট সংখ্যা ৪৩০। পণ্ডিত শিবদয়ালু এইগুলির মধ্যে ২২৭টি সূত্র বেছে নিয়ে সেগুলির হিন্দি ও ইংরেজি অনুবাদ করেন। এটি সর্বপ্রথম ২৪ জানুয়ারি ১৬৫৬ তারিখে 'আর্য মিত্র'র বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। পরবর্তীকালে এটি 'বৃহস্পতিরাজধর্মসূত্রম্' শিরোনামে দয়ানন্দ প্রতিষ্ঠান ২০৩০ বিক্রমাব্দে প্রকাশিত করে।
আয়ুর্বেদ
আয়ুর্বেদ হল শারীরিক, মানসিক এবং আত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষকে রোগমুক্ত, সুস্থ এবং সবল রাখার প্রাচীন আর্ষ-পদ্ধতি। আয়ুর্বেদের প্রচার ও প্রসারে আর্যসমাজের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। আর্যসমাজের গুরুকুলগুলিতে আয়ুর্বেদ বিষয়ের সু-সংবদ্ধ প্রশিক্ষণের সুবিধা শুরু থেকেই ছিল এবং গুরুকুলের সাথে সংযুক্ত রসায়নশালাগুলিতে শাস্ত্রোক্ত পদ্ধতিতে আয়ুর্বেদিক ওষুধও তৈরি করা হতো। গুরুকুল কাংগড়ী থেকে আয়ুর্বেদে স্নাতক ডিগ্রিপ্রাপ্ত আয়ুর্বেদালঙ্কাররা চিকিৎসা পেশায় যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছেন। যদিও আর্যসমাজী লেখকদের আয়ুর্বেদশাস্ত্র সম্পর্কিত লেখালেখি স্বল্প, তবে তা গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমে ইটাওয়া নিবাসী পণ্ডিত ভীমসেন শর্মা আয়ুর্বেদ-শব্দার্ণব প্রকাশ করেছিলেন। পণ্ডিত জয়দেব শর্মা বিদ্যালঙ্কার 'চরকসংহিতা'-র হিন্দি অনুবাদ করেছিলেন, যা আর্য সাহিত্য মণ্ডল, আজমের থেকে প্রকাশিত হয়। গুরুকুল কাংগড়ীর স্নাতক পণ্ডিত অত্রিদেব গুপ্ত বিদ্যালঙ্কার 'চরক' এবং 'সুশ্রুত সংহিতা'-র অনুবাদ করেছিলেন। তিনি আয়ুর্বেদের ইতিহাসও লিখেছেন। পণ্ডিত সূরমচন্দ্র বৈদ্যবাচস্পতির 'আয়ুর্বেদের ইতিহাস' একটি গবেষণামূলক কৃতিত্বপূর্ণ কাজ। গুরুকুল ঝাঝরের প্রাক্তন আয়ুর্বেদ বিভাগের প্রধান পণ্ডিত সত্যদেব বাসিষ্ঠ সংস্কৃত ভাষায় 'নাড়ী তত্ত্বদর্শন' নামে একটি মহাগ্রন্থ লিখেছেন, যা তার বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। স্বামী ওমানন্দ সরস্বতী বিভিন্ন ঔষধির আয়ুর্বেদিক উপযোগিতা নিয়ে বহু ছোট ছোট গ্রন্থ রচনা করেছেন। এগুলি হরিয়ানা সাহিত্য প্রতিষ্ঠান দ্বারা প্রকাশিত হয়েছে।
স্থাপত্যবেদ (আসছে.....)